Wellcome to National Portal
মেনু নির্বাচন করুন
Main Comtent Skiped

খেলাধুলা ও বিনোদন

সাহিত্য-সংস্কৃতির ক্ষেত্রে সাঁথিয়ার মানুষের রয়েছে অসামান্য অবদান। বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর সাঁথিয়ার ইছামতি নদীর ওপর দিয়ে বোটে চড়ে শিলাইদহ-সাজাদপুর যাতায়াত করেছেন। সাঁথিয়ার প্রকৃতি ও মানুষের কাছ থেকে তিনি সাহিত্যের রসদ সংগ্রহ করেছেন। সাঁথিয়া ডাকবাংলোতে বসে কবি শামসুর রহমান দরদ-উছলিত চিত্তে রচনা করেছেন দু:খিনী সাঁথিয়া নামক কবিতা। এই মাটিতে জন্ম নেওয়া সাহিত্যিক সাংবাদিক ও গবেষণাগণ রচনা করেছেন অসংখ্য গ্রন্থ। সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে সাঁথিয়ার স্থান অতি ‍উচ্চে। বিভিন্ন গ্রামে আছে সাংস্কৃতিক ও ক্লাব। সাঁথিয়ায় সুস্থ সংস্কৃতি চর্চার জন্য ১৯৭২ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় সাঁথিয়া থিয়েটার। এ পর্যন্ত ১৫টির অধিক নাটক মঞ্চস্থ করেছে এই সাংস্কৃতিক সংগঠন। এর প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন সত্য মাস্টার। বর্তমানে সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন অধ্যাপক আব্দুদ দাইয়েন, সম্পাদক হিসেবে আছেন রতন দাস। লোক সংস্কৃতি ও নাগরিক সংস্কৃতি উভয় দিক থেকেই সাঁথিয়া সমৃদ্ধ, তবে নাগরিক সংস্কৃতি অপেক্ষা লোক সংস্কৃতিতেই এ অঞ্চল অধিক ঐশ্বর্যের অধিকারী। বিভিন্ন উৎসব-অনুষ্ঠান যেমন-ঈদ, পূজা-পার্বন-হালখাতা, বিবাহ, সুন্নতে খাৎনাসহ নানা আচার-অনুষ্ঠান সাঁথিয়ার মানুষের জীবনপ্রবাহে আনন্দবার্তা নিয়ে আসে। বর্ষার দিনে নৌকা বাইচ সাঁথিয়াবাসীর মধ্যে আলাদা প্রাণচাঞ্চল্য সৃষ্টি করে। বিভিন্ন ধরনের মেলার আনন্দ তো তুলনাহীন। লাঠিখেলার গৌরবও কম নয়। মেয়েলি গীত, লোক সঙ্গীত, প্রবাদ-প্রবচন, ছড়া, ধাঁধাঁ প্রভৃতি উপাদান সাঁথিয়ার সংস্কৃতির ভান্ডারকে করেছে পরিপূর্ণ। এখানকার ছেলেমেয়েরা মনের আনন্দে নাচে আর ছড়া কাটে‘ ইচিং, বিচিং, ‍ছিচিংছা প্রজাপতি উড়ে যা। কখনো বলে চি বুড়ি আতা/কচুর পাতা/গাই বিয়ালো ‍বাছুর তোল। তোল- তোল-তোল। সাঁথিয়ার পথে-প্রান্তরে, মাঠে-ঘাটে শোনা যায় নানারকম লোকসঙ্গীতের সুরতরঙ্গ। নৌকা বাইচের গানের তুলনা দেওয়াই ভার। বৈঠা টান দ্যাওরে জবাই করবো খাসী/বোয়াইলমারীর হাটে গিয়ে কিনবো দাঁতের মিসি। কত নাম না জানা শিল্পী ও সঙ্গীতরসিক যে এখানে আছেন তার ইয়ত্তা নেই। বছরের পর বছর, মাসের পর মাস বললে এবং লিখলেও সাঁথিয়ার সাংস্কৃতির গৌরবের কথা বলে এবং লিখে শেষ করা যাবেনা। কেবল সংখ্যার দিক থেকেই নয়, গুনে-মানেও এগুলো সমৃদ্ধ। সাঁথিয়ার সাংস্কৃতির এসব উপাদান বাঙ্গালী সংস্কৃতির অমূল্য সম্পদ। এগুলোর মধ্যে আবহমান কাল থেকে গড়ে উঠা সাঁথিয়ার বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর প্রাণস্পন্দন অনুভূব করা যায়। সাঁথিয়া বর্তমানে কল্লেলিনী তিলোত্তমা হয়েছে। রাস্তাঘাট, অবকাঠামো, শিক্ষা-সংস্কৃতি, অর্থনীতি –সবক্ষেত্রেই হয়েছে অসামান্য উন্নতি। বাংলাদেশের প্রাণপ্রবাহের সাথে তালমিলিয়ে দৃপ্ত পদক্ষেপে এগিয়ে চলছে এখানকার মানুষ। বহুযুগের কর্মপ্রবাহের স্রোত মিশে গেছে এই মটিতে। এখানকার প্রকৃতির সৌন্দর্য আর মানুষের মাহাত্ব্যের কথা ভাবলে মনের অজান্তেই চিত্তে পুলক জেগে ওঠে । মেঠো পথের সোঁদা গন্ধে মনের গহনে কলকল করে ওঠে আনন্দের ফল্লুধারা।